এসএসসি : ১৯৯৮
এইচএসসি : ২০০০
১৯৯৫ সালের কথা। ঢাকা শহরের নামকরা একটা স্কুলে পড়ি। অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে উঠব, বাধে বিপত্তি। পড়ালেখার সময়ে দুষ্টামি-অলসতা আর গ্রহ-নক্ষত্র বিচরণ করতে করতে মেধার চূড়ান্ত পরিণাম- অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় অংকে বেজায় খারাপ করি। বাবা-মার অনুরোধে হয়ত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাকে নবম শ্রেণীতে উন্নীত করত, কিন্তু বাবা-মার পচ্ছন্দের বিষয় বিজ্ঞান শাখায় পড়তে পারব না। মেধা থাকুক আর নাই থাকুক ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া নিয়ে কথা আর যেটার শুরু কিনা নবম শ্রেণীতে উঠলেই সাইন্স পড়তে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছাত্রছাত্রীরা ঐ ছাই-কলা-বাণিজ্য বুঝার আগেই অভিভাবকরা কোন একটা বিষয় চাপিয়ে দেয় আর শিক্ষার্থীরাও তাতে চলতে থাকে। যা হোক বর্তমান স্কুলে যেহেতু সাইন্স পাচ্ছি না তাহলে খোঁজ- দ্যা সার্চ। ঢাকায় কোন স্কুলে তখনও ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে? মায়ের অনেক টেনশন, বাবার মটর সাইকেলের এক গাদা পেট্রোল পুড়িয়ে আর আমার আরামের কয়েকদিন ঘুম হারাম করে খোঁজ পাওয়া গেল- বাংলাদেশ রাইফেলস স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম জমা দেয়ার এক-দুই দিন বাকি আছে। রাইফেলস পাবলিক স্কুল খুব ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছেলে একবার সুযোগ পেলে খুব ভাল করবে। বাবা আমার খুশিতে আত্মহারা হয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার জীবনের সবচেয়ে সৌভাগ্যতম কাজটা করে ফেললেন ; পাবলিক স্কুলের ফরম তো আনেই নাই, এমনকি বাংলদেশ রাইফেলস নামে যে আরেকটা স্কুল আছে সেটারও দিবা শাখার ফরম আনে নাই, আনসে নৈশ শাখা মানে নাইট শিফটের!!
একি! এত কাল জানতাম, ছিন্নমূল টোকাই পোলাপান বা এনজিও টাইপ প্রতিষ্ঠানে নাইট শিফটের ক্লাস হয়, কিন্তু এরকম নামকরা স্কুলেও নাইট শিফট আছে, জানা ছিল না। হাতে আর সময়ও নাই, সাইন্স পড়তে হলে নতুন করে ফরম জমা দেওয়া সম্ভব না তাই নৈশ শাখায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে দিলাম। ভর্তি পরীক্ষার লিখিত-মৌখিক দুটাই খুব সহজে পার করে নিজের পিঠ নিজেই একবার চাপড়ে দিলাম, বাহ আমিতো অনেক ভাল ছাত্র হয়ে গেসি!! এই গৌরব বেশিদিন টিকে নাই। একদিন ক্লাসে স্বপন স্যার বললেন, তোমরা যারা এই স্কুলে নৈশ শাখায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছ, তারা ভেবো না অনেক ভাল ছাত্র-ছাত্রী ; আমরা অনেক গুলা গরু-গাধা থেকে কিছু উত্তম গরু-গাধা বেছে নিছি মাত্র।
নিজের সম্বন্ধে সৎ অনুধাবন থেকেই জানতাম, স্যার ঠিকই বলেছেন। গৌরবের বেলুন চুপসে গেলেও বাস্তবতা মেনেই নিজেকে শোধরানোর সুযোগ পাই, পাই আলোর দিশা। যেই অংক আমার কাছে মুখস্থ করার বিষয় ছিল সেটা মুখে না, মাথা দিয়ে করতে শিখলাম। যার অন্যতম আলোর দিশারি ছিলেন মোখলেছুর রহমান স্যার। যেই অংককে ভয় পেতাম সেটা জয় করে পিছন ফিরে আর তাকাতে হয় নি। রসায়নের ইকবাল স্যার কিংবা জীববিজ্ঞানের রোমানা ম্যাডাম- যাদের ক্লাসে ‘শুধুই তাদের জন্য’ পড়ালেখা করে স্কুলে যেতাম। ন্যুনতম ফার্স্ট ডিভিশন পেলেই যেখানে খুশি ছিলাম সেখানে কিনা এসএসসিতে স্টার আর ৬টা লেটারসহ পাশ করি। এক একটা লেটার আসলে এক একজন শিক্ষকের প্রতি ভালবাসা ছিল, যদি এই বিষয়ে খারাপ করি তাহলেতো আমার ঐ পছন্দের শিক্ষকের প্রতি অবিচার হয়ে যাবে। আর এভাবেই দিনে দিনে সব বিষয়ে ভাল করতে শুরু করি। আসলে রাইফেলস স্কুলে পড়ার সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা হল “আমিতো পড়ালেখা করি নি, পড়ালেখা আমাকে করিয়েছে”।
শুরুতেই যেই নাইট শিফটের কথা বলছিলাম সেটা ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি প্রথমে মেয়েদের মর্নিং শিফটে আর ছেলেদের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ডে শিফটে স্থানান্তরিত করা হয়। বিলুপ্ত হয় ঢাকার নামকরা স্কুলের নাইট শিফট। নাইট শিফট ছিল প্রয়াত মিয়া মোঃ মনিরুজ্জামানের স্বপ্নের ফসল। অনেকের মতে বিদ্যালয়কে আরও উঁচুতে ওঠাতে ফান্ডের প্রয়োজনে তিনি নাইট শিফট চালু করেছিলেন। যেই কারণেই করুন না কেন আমার মত অনেক গরু-গাধা মানুষ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। স্যরের এই অসামান্য পদক্ষেপ আমি সারাজীবন মনে রাখব। আল্লাহ্তালা তাকে বেহেস্ত নসিব করুন (আমীন)।

We prefer to keep things recent and full of money and prizes, so we're always cooking up thrilling methods that you simply can} win big. Take benefit of mychoice® promotions and different presents at Hollywood Casino Gulf Coast and you could win cash, wonderful prizes, Free SlotPlay® and more! Check again often, so 바카라사이트 you by no means miss one tasty bite of the motion. We've got it all- every little thing from the high-stakes style of blackjack, the fast-paced pleasure of craps to the fun and technique of poker. With 24 tables waiting for you, odds are you're in for the time of your life.
উত্তরমুছুন