শুভ নববর্ষ ২০১৯: ইংরেজি নববর্ষ বরণের নানা বর্ণিল বিবরণ



Happy New Year

বহুবর্ণিল আতশবাজি আর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিবারই  ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগতজানায় বিশ্ববাসী। পুরনো স্মৃতির ভাণ্ডারে জমা অতীতের গ্লানিভুলে নতুন উদ্দীপনা আর উদ্যম নিয়ে নবাগত আগামীকে বরণ করে নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজ নিজ ঐতিহ্যের ঢালায় বরণ করে করে নতুনবছরকে।
আরমাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। এরপরই বিশ্ব বিদায় জানাবে ২০১৮ সালকে আর বরণ করে নিবে ২০১৯ সালকে।  কিন্তুবিশ্বের সব দেশে নতুনবছর একই সময়ে বরণ করবে না। বরং ভিন্ন ভিন্ন দেশে আলাদা আলাদা সময়ে বরণ হবে ইংরেজি নববর্ষকে।

কোন দেশেপ্রথমবরণকরবেনববর্ষকে?
নতুনবর্ষ মানেই চোখে ভেসে ওঠে আকাশে আতশবাজির খেলা। সিডনির অপেরা হাউজ কিংবা লন্ডন ব্রিজ। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড নয়প্রথম নববর্ষ বরণ করে অন্য আরেক দেশ। টোংগো, সামোয়া ও কিরিটিমাটি দ্বীপে সবার আগে নববর্ষ বরণ শুরু হয়। প্রশান্তমহাসাগরের ছোট দেশ টোংগো হচ্ছে বিশ্বের প্রথম দেশ সেখানে নববর্ষকে বরণ করে নেয়া হয়। ৩১ ডিসেম্বর গ্রিনিচমান সময়ে যখন ঘড়িতে সকাল ১০টা তখনই সেখানে শুরু হয়ে যাবে ২০১৯ সাল বরণ। অর্থাৎ  বাংলাদেশসময় ৩১ ডিসেম্বর বিকেল চারটায় টোংগোতে ২০১৯ সাল শুরু।  
কোন দেশসবারশেষেবরণকরবে২০১৯কে?
সারাবিশ্বে নববর্ষ উদযাপনের প্রায় ১২ ঘণ্টা পরযুক্তরাষ্ট্রের ছোট কিছু দ্বীপ বরণ করবে নতুন বছরকে। যুক্তরাষ্ট্রের বেকার দ্বীপ হাউল্যান্ড দ্বীপসবার শেষে নববর্ষ বরণকারী। তবে সেখানে কোনো মানুষ বসবাস করে না।
তবেশেষের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আমেরিকান সামোয়া। মার্কিন ওই দ্বীপটি টোংগোর৫৫৮ মাইল দূরে অবস্থিত। যেখানে নববর্ষ উদযাপন শুরু হয় আগেভাগেই।  সেখানকার বাসিন্দারা নতুন বছর বরণের ২৫ ঘণ্টা আগেথেকেই উৎসব করতে থাকে।
বিশ্বের উল্লেখযোগ্য স্থান হিসেবে সবার আগেনতুন বছরকে স্বাগত জানায় নিউজিল্যান্ড। স্থানীয় সময় রাত ১২টা এক মিনিটে হরেকরঙের আলোয় উদ্ভাসিত হয় অকল্যান্ডের আকাশ।

এছাড়াও, খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে সিডনির অপেরা হারবারে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী জমকালোআতশবাজি প্রদর্শনীর। বর্ণিল আলোকচ্ছটা উপভোগ করেন কয়েক লাখ মানুষ।
আতশবাজিরবর্ণিল আলোকছটায় নতুন বছরকে স্বাগত জানায় অস্ট্রেলিয়া, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, কোরিয়া, রাশিয়াসহএশিয়া, ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্নবহু দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফায় ছিল চোখ ধাঁধানো আতশবাজি সাম্প্রতিক কালের বর্ষবরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

কীভাবে এলো ইংরেজি নববর্ষ।
আধুনিকগ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার জুলিয়ান ক্যালেন্ডারেজানুয়ারির তারিখ থেকেশুরু হয় নতুন বছর।তবে ইংরেজি নতুন বছর উদযাপনের ধারণাটি আসে খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ অব্দে। তখন মেসোপটেমিয় সভ্যতার (বর্তমান ইরাক) লোকেরা নতুন বছর উদযাপন শুরু করে। তারা তাদের নিজস্ব গণনা বছরের প্রথম দিন নববর্ষ উদযাপন করতো। তবে রোমে নতুন বছর পালনের প্রচলন শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৩সালে। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দে সম্রাটজুলিয়াস সিজার একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। যা জুলিয়ান ক্যালেন্ডারনামে পরিচিত।
রোমেজুলিয়ান ক্যালেন্ডারের অন্তর্গত বছরের প্রথম দিনটি জানুস দেবতার উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করা হয়। জানুস হলেন প্রবেশপথ বা সূচনার দেবতা।তার নাম অনুসারেই বছরের প্রথম মাসের নাম জানুয়ারি নামকরণ করা হয়।
এতোগেলো যিশুর জন্মের আগের কথা। যিশুখ্রিষ্টের জন্মের পর তার জন্মেরবছর গণনা করে ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি এই ক্যালেন্ডারের নতুনসংস্কার করেন। যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারনামে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই কার্যত দিনপঞ্জি হিসেবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়।
নতুনবছর পালন
আনুষ্ঠানিকভাবেনিউ ইয়ার পালন শুরু হয় ১৯ শতকথেকে। নতুন বছরের আগের দিন অর্থাত্৩১ ডিসেম্বর হচ্ছেনিউ ইয়ার ইভ। এদিন নতুন বছরের আগমনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরাজ করে উত্সবমুখর পরিবেশ।

এদিকেইংরেজি নতুন বর্ষ পালনে ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন ইসরায়েল, দেশটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করলেও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না। কারণ বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী -ইহুদি উত্ হতে উত্পন্ন এই রীতি পালনেরবিরোধিতা করে থাকে। আবার কিছু দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে গ্রহণই করেনি। যেমন সৌদি আরব, নেপাল, ইরান, ইথিওপিয়া আফগানিস্তান। এসবদেশও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না।
বিভিন্নদেশে নতুন বছরের প্রথম দিনটি পাবলিক হলিডে। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বর রাত১২টা এক মিনিট থেকেইশুরু হয় নতুন বছরউদযাপনের উন্মাদনা। আকাশে ছড়িয়ে পড়ে আতশবাজির আলোকছটা। বিশ্বব্যাপী নিউ ইয়ার ডে সর্বজনীন একটিউৎসবে রূপান্তরিত হয়েছে।

: অ্যাডমিন পোস্ট


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন